আন্তর্জাতিক কর্মজীবন আর্জেন্টাইন-স্পেনীয় নাগরিক হিসেবে ২০০৪ সালে মেসিকে স্পেনের জাতীয় অনুর্ধ্ব ২০ ফুটবল দলে খেলার জন্য আমন...
আন্তর্জাতিক কর্মজীবন
আর্জেন্টাইন-স্পেনীয় নাগরিক হিসেবে ২০০৪ সালে মেসিকে স্পেনের জাতীয় অনুর্ধ্ব ২০ ফুটবল দলে খেলার জন্য আমন্ত্রন জানানো হয়। কিন্তু মেসি তা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি ২০০৪ সালের জুনে, আর্জেন্টিনার অনুর্ধ্ব ২০ দলের হয়ে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে প্রথম প্রীতি খেলায় মাঠে নামেন।তিনি ২০০৫ দক্ষিণ আমেরিকান যুব চ্যাম্পিয়নশীপে আর্জেন্টিনা দলের হয়ে খেলেন, যেখানে আর্জেন্টিনা তৃতীয় হয়। ২০০৫ ফিফা যুব চ্যাম্পিয়নশীপে আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন হয় এবং তিনি ৬টি গোল করে প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় হিসেবে গোল্ডেন বল এবং গোল্ডেন বুটের পুরস্কার জিতেন।২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট, ১৮ বছর বয়সে হাঙ্গেরির বিপক্ষে সিনিয়র দলে মেসির অভিষেক হয়। খেলার ৬৩তম মিনিটে বদলি হিসেবে খেলতে নেমে ৬৫তম মিনিটেই তাকে লাল কার্ড দেখে মাঠের বাহিরে চলে যেতে হয়। ম্যাচ-রেফারি মার্কাস মের্ক দাবী করেন, মেসি হাঙ্গেরির ডিফেন্ডার ভিলমস ভ্যানজাককে কনুই দিয়ে আঘাত করেছিলেন, যিনি মেসির শার্ট ধরে টানছিলেন। রেফারির সিদ্ধান্তটি ছিল বিতর্কিত। কিংবদন্তী দিয়েগো মারাদোনা দাবী করেন, রেফারির সিদ্ধান্তটি পূর্ব-সংকল্পিত ছিল।
২০০৫ এর ৩ সেপ্টেম্বর, আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে মেসি আবারও খেলতে নামেন। বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ঐ খেলায় প্যারাগুয়ের বিপক্ষে আর্জেন্টিনা ০–১ ব্যবধানে হেরে যায়।পেরুর বিপক্ষে খেলায় মেসি প্রথম দলের সদস্য হিসেবে খেলতে নামেন এবং খেলায় আর্জেন্টিনা জয় পায়। খেলা শেষে পেকারম্যান মেসিকে ‘‘রত্ন’’ হিসেবে অ্যাখ্যায়িত করেন। ২০০৬ সালের ১ মার্চ, আর্জেন্টিনার হয়ে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে একটি প্রীতি খেলায় মেসি প্রথম গোল করেন।
২০০৬ বিশ্বকাপ |
২০০৫–০৬ মৌসুমে ইনজুরির কারনে ২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপে মেসির খেলা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। তবুও মেসি দলে ডাক পান। বিশ্বকাপ শুরুর পূর্বে আর্জেন্টিনা অনুর্ধ্ব ২০ দলের বিপক্ষে সিনিয়র দলের হয়ে একটি খেলায় তিনি ১৫ মিনিট খেলেন এবং অ্যাঙ্গোলার বিপক্ষে একটি প্রীতি খেলায় ৬৪তম মিনিটে বদলি হিসেবে নামেন।আইভরি কোস্টের বিপক্ষে বিশ্বকাপের প্রথম খেলায় মেসি সাইড বেঞ্চে বসেছিলেন।পরের খেলায় সার্বিয়া এবং মন্টেনেগ্রোর বিপক্ষে খেলার ৭৪তম মিনিটে বদলি হিসেবে মাঠে নামেন মেসি এবং ৭৮তম মিনিটে হের্নান ক্রেসপোর একটি গোলে সহায়তা করেন। খেলার ৮৮তম মিনিটে মেসি একটি গোল করেন। এতে করে, আর্জেন্টিনার সর্বকনিষ্ঠ এবং ইতিহাসের ৬ষ্ঠ কনিষ্ঠতম খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপে গোল করার কৃতিত্ব অর্জন করেন তিনি। খেলায় আর্জেন্টিনা ৬–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে। নেদারল্যান্ডস-এর বিপক্ষে পরের খেলায় মেসি প্রথম দলে সুযোগ পান। খেলাটি ০–০ সমতায় শেষ হয়। মেক্সিকোর বিপক্ষে রাউন্ড-১৬ এর খেলায় ৮৪তম মিনিটে মেসি বদলি হিসেবে খেলতে নামেন। খেলায় উভয় দল তখন ১–১ গোলে সমতায় ছিল। খেলতে নেমেই তিনি একটি গোল করলেও তা অফসাইডের কারনে বাতিল হয়ে যায়। অতিরিক্ত সময়ে রদ্রিগুয়েজের গোলে আর্জেন্টিনা ২–১ ব্যবধানে জয় পায়।কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে কোচ জোসে পেকারম্যান মেসিকে বেঞ্চে বসিয়ে রাখেন। পেনাল্টি শুটআউটে ৪–২ ব্যবধানে আর্জেন্টিনা হেরে যায় এবং টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ে।
২০০৭ কোপা আমেরিকা |
২০০৭ সালের ২৯ জুন, মেসি কোপা আমেরিকায় তার প্রথম খেলায় মাঠে নামেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ঐ খেলায় আর্জেন্টিনা ৪–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে। খেলায় মেসি প্লেমেকার হিসেবে তার সামর্থের জানান দেন। তিনি হের্নান ক্রেসপোর একটি গোলে সহায়তা করেন। থেলার ৭৯তম মিনিটে মেসিকে উঠিয়ে তেভেজকে নামানো হয় এবং তেভেজ একটি গোল করেন।
আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় খেলা ছিল কলম্বিয়ার বিপক্ষে। খেলায় তিনি একটি পেনাল্টি জিতেন এবং পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান হের্নান ক্রেসপো। খেলায় আরও একটি গোলে তার ভূমিকা ছিল। ডিবক্সের বাহিরে মেসিকে ট্যাকল করা হলে রেফারি ফাউলের বাঁশি বাজান এবং আর্জেন্টিনার পক্ষে ফ্রি-কিক দেন। ফ্রি-কিক থেকে গোল করেন রিকুয়েলমে। খেলায় আর্জেন্টিনা ৪–২ ব্যবধানে জয় লাভ করে। এতে করে, আর্জেন্টিনার কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হয়।
তৃতীয় খেলায় প্যারাগুয়ের বিপক্ষে, কোচ মেসিকে বিশ্রামে রাখেন। খেলার ৬৪তম মিনিটে এস্তেবান কাম্বিয়াসোর বদলে তিনি মাঠে নামেন। খেলাটি তখন ০–০ গোলে সমতায় ছিল। তিনি হ্যাভিয়ের মাশ্চেরানোর গোলে সহায়তা করেন। খেলায় আর্জেন্টিনা ১–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে।
কোয়ার্টার ফাইনালে, আর্জেন্টিনা মুখোমুখি হয় পেরুর। রিকুয়েলমের পাস থেকে মেসি টুর্নামেন্টে তার দ্বিতীয় গোল করেন। খেলায় আর্জেন্টিনা ৪–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে।সেমি ফাইনালে মেক্সিকোর বিপক্ষে, মেসি একটি গোল করেন এবং দলকে ৩–০ ব্যবধানের জয় এনে দেন। ফাইনালে ব্রাজিলের বিপক্ষে, আর্জেন্টিনা ৩–০ ব্যবধানে পরাজিত হয়। মেসি টুর্নামেন্টের কনিষ্ঠ সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন।
২০০৮ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক |
২০০৮ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে খেলার জন্য বার্সেলোনা মেসিকে ছাড়পত্র দিতে রাজি হয়।তিনি আর্জেন্টিনা দলে যোগদান করেন এবং আইভরি কোস্টের বিপক্ষে থেলায় প্রথম গোল করে দলকে ২–১ ব্যবধানে জয় এনে দেন।নেদারল্যান্ডস-এর বিপক্ষে দ্বিতীয় থেলায় তিনি একটি গোল করেন এবং অতিরিক্ত সময়ে এঙ্গেল ডি মারিয়ার একটি গোলে সহায়তা করে দলকে ২–১ ব্যবধানের জয় এনে দেন।সেমি ফাইনালে, চিরপ্রতিদ্বন্দী ব্রাজিলের বিপক্ষে তিনি খেলতে নামেন এবং দলকে ৩–০ ব্যবধানের জয় এনে দেন। ফাইনালে, নাইজেরিয়ার বিপক্ষে এঙ্গেল ডি মারিয়ার একমাত্র গোলটিতে তিনি সহায়তা করেন। খেলায় আর্জেন্টিনা ১–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে এবং স্বর্ণপদক জিতে।২০১০ বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব[সম্পাদনা]
২০০৯ সালের ২৮ মার্চ, ভেনিজুয়েলার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের খেলায় মেসি ১০ নম্বর জার্সি পরে খেলতে নামেন। আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের ম্যানেজার হিসেবে এটি ছিল মারাদোনার প্রথম খেলা। খেলায় আর্জেন্টিনা ৪–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে। খেলার প্রথম গোলটি করেন মেসি।২০১০ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে মেসি মোট ১৮টি খেলায় মাঠে নামেন এবং চারটি গোল করেন।
২০১০ বিশ্বকাপ |
২০১০ বিশ্বকাপে মেসি ১০ নম্বর জার্সি পরে মাঠে নামেন। এই প্রথম বড় কোন প্রতিযোগীতায় তিনি ১০ নম্বর জার্সি পরে নামেন।বিশ্বকাপের প্রথম খেলায়, নাইজেরিয়ার বিপক্ষে খেলার পুরোটা সময়ই তিনি মাঠে ছিলেন। তিনি গোল করার অনেকগুলো সুযোগ তৈরি করেছিলেন, কিন্তু তার সবকয়টি প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন নাইজেরিয়ান গোলরক্ষক ভিনসেন্ট এনইয়েমা। খেলায় আর্জেন্টিনা ১–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে।পরের খেলায় কোরিয়া রিপাবলিকের বিপক্ষে মেসি মাঠে নামেন। খেলায় আর্জেন্টিনা ৪–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে। মারাদোনার অধীনে তিনি মূলত একজন আক্রমনাত্মক মাঝমাঠের খেলোয়াড় বা প্লেমেকার হিসেবে খেলেছিলেন।খেলার সবকটি গোলেই তার ভূমিকা ছিল। তার সহায়তায় গঞ্জালো হিগুয়েইন খেলায় হ্যাট্রিক করেন।বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার তৃতীয় ও গ্রুপ পর্বের শেষ খেলায় গ্রীসের বিপক্ষে মেসি অধিনায়ক হিসেবে মাঠে নামেন। খেলায় আর্জেন্টিনা ২–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে। কোন গোল না করলেও এই জয়ে মেসির বড় ভূমিকা ছিল, যার ফলে তাকে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত করা হয়।
রাউন্ড ১৬-তে, মেক্সিকোর বিপক্ষে খেলায় কার্লোস তেভেজর একটি গোলে মেসি সহায়তা করেন। খেলায় আর্জেন্টিনা ৩–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে।কোয়ার্টার ফাইনালে, জার্মানির বিপক্ষে ৪–০ ব্যবধানে হেরে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হয়।প্রতিযোগীতার গোল্ডেন বল পুরষ্কারের জন্য ১০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকায় মেসি জায়গা পান। ফিফার টেকনিক্যাল গবেষনা দল মেসির সক্ষমতা সম্পর্কে বর্ণনা করতে গিয়ে বলে, ‘‘অসাধারন গতি, দলের জন্য সৃজনশীলতা, ড্রিবলিং, শুটিং, পাসিং এ সবগুলোতেই তিনি দক্ষ এবং দর্শনীয়।’’
২০১১ কোপা আমেরিকা, ২০১৪ বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব এবং প্রদর্শনী খেলাসমূহ |
২০১০ সালের ১৭ নভেম্বর, দোহায় ব্রাজিলের বিপক্ষে প্রীতি খেলার শেষ মিনিটে মেসি একটি গোল করেন এবং দলকে ১–০ ব্যবধানের জয় এনে দেন।২০১১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি, সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়, পর্তুগালের বিপক্ষে খেলার শেষ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন মেসি। খেলায় আর্জেন্টিনা ২–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে। প্রথম গোলটিতে সহায়তা করেছিলেন তিনি।
২০১১ কোপা আমেরিকায় মেসি আর্জেন্টিনার হয়ে অংশগ্রহন করেন। প্রতিযোগীতায় তিনি কোন গোল করতে না পারলেও তিনটি গোলে সহায়তা করেন। ১ জুলাই, বলিভিয়ার বিপক্ষে প্রথম খেলাটি ১–১ সমতায় শেষ হয়। মেসিকে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত করা হয়।কলম্বিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় খেলাটি গোলশূন্য ড্র হয়।তৃতীয় খেলায়, কোস্টারিকার বিপক্ষে আর্জেন্টিনা ৩–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে। এই খেলায়ও মেসিকে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত করা হয়।[২৪৭] কোয়ার্টার ফাইনালে, উরুগুয়ের বিপক্ষে পেনাল্টি শুটআউটে ৫–৪ ব্যবধানে হেরে আর্জেন্টিনাকে প্রতিযোগীতা থেকে বিদায় নিতে হয়। আর্জেন্টিনার পক্ষে প্রথম পেনাল্টি শট নিয়ে মেসি গোল করেন।
কোপা আমেরিকায় অসফল হওয়ার পর সার্হিও বাতিস্তাকে সরিয়ে আর্জেন্টিনার কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয় আলেহান্দ্রো সাবেয়াকে। ২০১১ সালের আগস্টে, সাবেয়া মেসিকে দলের অধিনায়কের দায়িত্ব প্রদান করেন। ২০১২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি, সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার হয়ে মেসি তার প্রথম হ্যাট্রিক করেন। খেলায় আর্জেন্টিনা ৩–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে। ২০১২ সালের ৯ জুন, আর্জেন্টিনার হয়ে মেসি তার দ্বিতীয় হ্যাট্রিক করেন। ব্রাজিলের বিপক্ষে ঐ খেলায় আর্জেন্টিনা ৪–৩ ব্যবধানে জয় লাভ করে। এতে করে, আর্জেন্টিনার হয়ে ৭০ খেলায় মেসির মোট গোল সংখ্যা দাড়ায় ২৬ এবং ২০১২-তে আর্জেন্টিনার হয়ে ৩ খেলায় তার গোল সংখ্যা দাড়ায় ৭। এই গোলটি তার রেকর্ড ভঙ্গকারী মৌসুমের ৮২তম গোল ছিল। এ পর্যন্ত মোট ২৬ গোল করে তিনি আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের চতুর্থ সর্বোচ্চ গোলদাতায় পরিনত হন।
৭ সেপ্টেম্বর, প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের খেলায় মেসি আর্জেন্টিনার হয়ে তার ২৮তম গোল করেন। খেলাটিতে আর্জেন্টিনা ৩–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে। এতে করে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষস্থানে চলে যায় আর্জেন্টিনা। প্যারাগুয়ের বিপক্ষে গোলটি ২০১৪ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ৮ খেলায় মেসির চতুর্থ গোল ছিল। এতে করে আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় তৃতীয় স্থানে উঠে আসেন মেসি। এই গোলের মাধ্যমে আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বশেষ ছয় খেলার সবকটিতে মোট দশ গোল করেন তিনি। ২০১২ সালে আর্জেন্টিনার হয়ে ৯ খেলায় ১২ গোল করেন মেসি।
২০১৩ সালের ২২ মার্চ, ভেনিজুয়েলার বিপক্ষে ২০১৪ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের খেলায় পেনাল্টি থেকে মেসি ২০১৩ সালে তার প্রথম আন্তর্জাতিক গোল করেন। এছাড়া, ওই খেলায় তিনি গঞ্জালো ইগুয়াইনের দুইটি গোলে সহায়তাও করেন। খেলায় আর্জেন্টিনা ৩-০ গোলে জয় লাভ করে। ২০১৩ সালের ১৪ জুন, মেসি গুয়াতেমালার বিপক্ষে হ্যাট্রিক করে দলকে ৪-০ গোলের জয় এনে দেন এবং এর মাধ্যমে তিনি আর্জেন্টিনার সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় দিয়েগো মারাদোনার ৩৪ গোলকে ছাড়িয়ে যান এবং ৩৫ গোল নিয়ে এর্নান ক্রেসপোর সাথে যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করতে থাকেন। প্যারাগুয়ের বিপক্ষে পেনাল্টি থেকে জোড়া গোল করে ক্রেসপোকেও ছাড়িয়ে যান মেসি। এছাড়া, ওই খেলায় তিনি আগুয়েরোর একটি গোলে সহায়তায়ও করেন। খেলায় আর্জেন্টিনা ৫-২ গোলে জয় লাভ করে এবং দুইটি খেলা হাতে রেখেই ২০১৪ বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে নিজেদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে।
মেসি তার ২০১৪ বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব অভিযান শেষ করেন ১০ গোল নিয়ে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে।[২৬০] ২০১৪ সালের ৭ জুন, স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে মেসি একটি গোল করেন এবং দলকে ২-০ গোলের জয় এনে দেন। এটিই ২০১৪ সালে আর্জেন্টিনার হয়ে তার প্রথম গোল।
২০১৪ বিশ্বকাপ
|
২০১৪ বিশ্বকাপের আর্জেন্টিনা দলে মেসিকে রাখা হয় অধিনায়ক হিসেবে। ১৫ জুন, গ্রুপ পর্বের প্রথম খেলায় বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার বিপক্ষে ২-১ গোলের জয়ে তিনি দলকে নেতৃত্ব দেন। খেলার ৬৫তম মিনিটে তিনি গোল করে আর্জেন্টিনাকে ২-০ ব্যাবধানে এগিয়ে নিয়ে যান। বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার তিন জন রক্ষণভাগের খেলোয়াড়কে কাটিয়ে তিনি গোলটি করেন। ২০০৬ বিশ্বকাপে সার্বিয়া ও মন্টেনেগ্রোর বিপক্ষে গোল করার আট বছর পর করা এই গোলটি বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় তার দ্বিতীয় গোল। গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় খেলায় ইরানের বিপক্ষে দ্বিতীয়ার্ধের ইনজুরি সময়ে আর্জেন্টিনার পক্ষে জয়সূচক গোল করেন মেসি। প্রায় ২৫ মিটার দূর থেকে নেয়া শটে বলটি সামান্য বাঁক খেয়ে গোলপোস্টের বাম পাশের উপরের কোনা দিয়ে ঢুকে যায়। এটি ছিল তার ৪০তম আন্তর্জাতিক গোল। এবং এই জয়ের মাধ্যমে আর্জেন্টিনা ২০১৪ বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে নিজেদের স্থান নিশ্চিত করে। ২৫ জুন, গ্রুপ পর্বের শেষ খেলায় নাইজেরিয়ার বিপক্ষে জোড়া গোল করার মাধ্যমে মেসি প্রতিযোগিতায় তার গোল সংখ্যা ৪-এ নিয়ে যান। খেলায় আর্জেন্টিনা ৩-২ গোলে জয় লাভ করে এবং গ্রুপে প্রথম স্থানে থেকে গ্রুপ পর্ব শেষ করে।গ্রুপ পর্বের ৩টি খেলায়ই সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন মেসি।
COMMENTS